শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪

বায়াররা পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, গার্মেন্টস শিল্প এখন ঘুরে দাঁড়ানোর পালা : শ্রমসচিব

গার্মেন্টস সমস্যার সমাধান হচ্ছে জানিয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নবনিযুক্ত সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেছেন, গার্মেন্টসপণ্যের বায়াররা আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। এখন গার্মেন্টস শিল্প ঘুরে দাঁড়ানো পালা।

তিনি বলেন, ‘যেকোনো মূল্যে ইন্ডাস্ট্রির চাকা চালু রাখতে হবে। ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ হয়ে গেলে মালিকদের যেমন লস হবে তেমনি শ্রমিকরাও কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে আমাদের দেশ থেকে অনেক অর্ডার চলে গেছে, ক্রিসমাসের অর্ডার বেশির ভাগই চলে গেছে। পাশাপাশি আন্দোলনের সময় অনেক দিন ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ ছিল। এছাড়াও গ্যাস ও বিদ্যুতের সমস্যা রয়েছে। এগুলো মেনে নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় বিকেএমইএ’র ভবনে বিকেএমইএ কর্মকর্তাদের সাথে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

সচিব বলেন, ‘দাবি হল বেতন বাড়ানোর, এখানে মজুরি বোর্ড আছে। এটা দেখতে হবে। তবে এটার জন্য রাস্তা বন্ধ করে দিলে তো সমাধান হবে না।’

তিনি বলেন, ‘এখান মেরিটের ওপর ভিত্তি করে চাকরিতে নিয়োগ দেয়া হবে। আমাদের জেন্ডার ইস্যু বায়ারদের জন্য ইমপরট্যান্ট। এখানে পিছিয়েপড়া নারীরা কাজ করছে। এটা বায়ারদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। শিল্প এলাকাগুলোতে আমরা টিসিবির সাথে কথা বলে এই এলাকাগুলোতে পণ্য বিক্রি বাড়ানোসহ প্রণোদনার মতো ব্যবস্থা করছি। এখানে অনেক দাবি এসেছে। আমরা এগুলো প্রক্রিয়া অনুযায়ী সমাধান করবো। আবার অনেক দাবি আছে অযৌক্তিক। এটাও ঠিক না।’

তিনি বলেন, ‘আমি মালিক পক্ষকে নিয়ে হতাশ। আমাদের শ্রমিক প্রতিনিধিদের কথা শোনার ধৈর্য্য না থাকলে তো এটা সমাধান হবে না। সুতরাং কথা শুনতে হবে। শ্রমিকদের সাথে ম্যানেজমেন্টের সাথে অনেক বিভেদ রয়েছে। আমাদের এসব জায়গায় ফোকাস করা দরকার।’

সচিব বলেন, ‘৫ আগস্টের পর অনেক বড় বড় মালিক পালিয়ে গেছে, আইনের আওতায় চলে এসেছে। সেখানে বেতন নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। প্রথমে বেক্সিমকো থেকে এ সমস্যা শুরু হয়। এটা সরকার ইতোমধ্যে একটি ফান্ড তৈরি করে সমাধান করেছে। আমি মনে করি এগুলো বড় কোনো সমস্যা না।’

সচিব বলেন, ‘আপনাদের যত আবেদন রয়েছে আমাদের একটি কমিটি রয়েছে এখানে। ইতোমধ্যে আমার কাছে ১৩৮টি অভিযোগ রয়েছে। প্রতিটি অভিযোগ আমরা খতিয়ে দেখবো। যারা এ ঘটনাগুলো ঘটিয়েছেন আমি শ্রমিক নেতাদের বলব, ফৌজদারি অপরাধকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। যারা আগুন দিয়েছে তাদের ধরলে আপনারা ব্যারিকেড দিয়ে বলবেন ছেড়ে দিতে, সেটা করা যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর পালা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকাসহ বায়াররা আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। আমাদের এখানেও অনেক কমিটি পলিটিসাইজ হয়ে গেছে। আমরা এগুলো সংস্কার করবো।’

তিনি বলেন, ‘যেকোনো সময় আপনারা পরামর্শ দেবেন। আমরা আইনগতভাবে আপনাদের সহায়তা প্রদান করবো। এক হাজারেরও বেশি মানুষ তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে। আমরা কিন্তু গুলির সামনে দাঁড়ানোর সাহস করতাম না, কিন্তু তারা করেছে। ওরা আন্দোলন করেছে বৈষম্যের বিরুদ্ধে।’

এসময় বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক মো: তরিকুল আলম, জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, সেনাবাহিনীর নারায়ণগঞ্জ জেলার কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল আতিক, বিজিএমইএ’র সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাসুদুজ্জামান প্রমুখ।

Source link

ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয়

বায়াররা পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, গার্মেন্টস শিল্প এখন ঘুরে দাঁড়ানোর পালা : শ্রমসচিব

আপডেট : ০১:২৯:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গার্মেন্টস সমস্যার সমাধান হচ্ছে জানিয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নবনিযুক্ত সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেছেন, গার্মেন্টসপণ্যের বায়াররা আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। এখন গার্মেন্টস শিল্প ঘুরে দাঁড়ানো পালা।

তিনি বলেন, ‘যেকোনো মূল্যে ইন্ডাস্ট্রির চাকা চালু রাখতে হবে। ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ হয়ে গেলে মালিকদের যেমন লস হবে তেমনি শ্রমিকরাও কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে আমাদের দেশ থেকে অনেক অর্ডার চলে গেছে, ক্রিসমাসের অর্ডার বেশির ভাগই চলে গেছে। পাশাপাশি আন্দোলনের সময় অনেক দিন ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ ছিল। এছাড়াও গ্যাস ও বিদ্যুতের সমস্যা রয়েছে। এগুলো মেনে নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় বিকেএমইএ’র ভবনে বিকেএমইএ কর্মকর্তাদের সাথে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

সচিব বলেন, ‘দাবি হল বেতন বাড়ানোর, এখানে মজুরি বোর্ড আছে। এটা দেখতে হবে। তবে এটার জন্য রাস্তা বন্ধ করে দিলে তো সমাধান হবে না।’

তিনি বলেন, ‘এখান মেরিটের ওপর ভিত্তি করে চাকরিতে নিয়োগ দেয়া হবে। আমাদের জেন্ডার ইস্যু বায়ারদের জন্য ইমপরট্যান্ট। এখানে পিছিয়েপড়া নারীরা কাজ করছে। এটা বায়ারদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। শিল্প এলাকাগুলোতে আমরা টিসিবির সাথে কথা বলে এই এলাকাগুলোতে পণ্য বিক্রি বাড়ানোসহ প্রণোদনার মতো ব্যবস্থা করছি। এখানে অনেক দাবি এসেছে। আমরা এগুলো প্রক্রিয়া অনুযায়ী সমাধান করবো। আবার অনেক দাবি আছে অযৌক্তিক। এটাও ঠিক না।’

তিনি বলেন, ‘আমি মালিক পক্ষকে নিয়ে হতাশ। আমাদের শ্রমিক প্রতিনিধিদের কথা শোনার ধৈর্য্য না থাকলে তো এটা সমাধান হবে না। সুতরাং কথা শুনতে হবে। শ্রমিকদের সাথে ম্যানেজমেন্টের সাথে অনেক বিভেদ রয়েছে। আমাদের এসব জায়গায় ফোকাস করা দরকার।’

সচিব বলেন, ‘৫ আগস্টের পর অনেক বড় বড় মালিক পালিয়ে গেছে, আইনের আওতায় চলে এসেছে। সেখানে বেতন নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। প্রথমে বেক্সিমকো থেকে এ সমস্যা শুরু হয়। এটা সরকার ইতোমধ্যে একটি ফান্ড তৈরি করে সমাধান করেছে। আমি মনে করি এগুলো বড় কোনো সমস্যা না।’

সচিব বলেন, ‘আপনাদের যত আবেদন রয়েছে আমাদের একটি কমিটি রয়েছে এখানে। ইতোমধ্যে আমার কাছে ১৩৮টি অভিযোগ রয়েছে। প্রতিটি অভিযোগ আমরা খতিয়ে দেখবো। যারা এ ঘটনাগুলো ঘটিয়েছেন আমি শ্রমিক নেতাদের বলব, ফৌজদারি অপরাধকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। যারা আগুন দিয়েছে তাদের ধরলে আপনারা ব্যারিকেড দিয়ে বলবেন ছেড়ে দিতে, সেটা করা যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর পালা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকাসহ বায়াররা আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। আমাদের এখানেও অনেক কমিটি পলিটিসাইজ হয়ে গেছে। আমরা এগুলো সংস্কার করবো।’

তিনি বলেন, ‘যেকোনো সময় আপনারা পরামর্শ দেবেন। আমরা আইনগতভাবে আপনাদের সহায়তা প্রদান করবো। এক হাজারেরও বেশি মানুষ তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে। আমরা কিন্তু গুলির সামনে দাঁড়ানোর সাহস করতাম না, কিন্তু তারা করেছে। ওরা আন্দোলন করেছে বৈষম্যের বিরুদ্ধে।’

এসময় বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক মো: তরিকুল আলম, জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, সেনাবাহিনীর নারায়ণগঞ্জ জেলার কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল আতিক, বিজিএমইএ’র সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাসুদুজ্জামান প্রমুখ।

Source link